ভোলার তুলাতুলি ঘাটে চাঁদাবাজি বন্ধে ইজারাদার ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত-৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভোলার তুলাতুলি খেয়া পারাপার ও লঞ্চঘাট ইজারা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে আসলাম গোলদার ও প্রিন্স বাবুসহ একটি চক্রের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে সাধারণ যাত্রীদের জিম্মি করে ইচ্ছে মত ভাড়া আদায় করতেন ঘাট ইজারাদার ও তার লোকজন। মাঝের চর থেকে কোনো গরীব চাষী সবজি নিয়ে আসলেও সবজির দাম এর চেয়ে ইজারাদারকে বেশী টাকা দিতে হতো। অনেকে টাকা দিতে না চাইলে তাদের হাতে চরম লাঞ্ছিত হতে হয়। দীর্ঘদিন এই অন্যায় অত্যাচার বন্ধে স্থানীয়রা আসলাম ও প্রিন্স বাবুকে চাপ সৃষ্টি করলেও তারা এসব বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করেনি।

এতে করে ক্ষোভের দানা বাধে স্থানীয়দের মধ্যে। এ নিয়ে মঙ্গলবার সকালে স্থানীয়রা গরীব মানুষদের উপর জুলুম অত্যাচার বন্ধে ইজারাদার আসলামের উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি শুরু হয়। এতে করে উভয়ে পক্ষের ৪-৫ জন আহত হয় বলে জানা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ঘাটের অন্যান্য ব্যবসায়ীরা জানান, দুপুরের দিকে তুলাতুলি ও মাঝের চরের খেয়া পারাপারে বেশি টাকা নেওয়া ও ঈদ উপলক্ষে আসলামের চাঁদাবাজি করছে এমন অভিযোগে এলাকার টিটু, জয়দেব, তরিক গোলদার, সাইফুল্লাহ, বাবু, কামালসহ বেশ কয়েকজন আসলামকে সরকারি নির্ধারিত টোল নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু সদ্য বিএনপি থেকে আসা নব্য আওয়ামী লীগ আসলাম গোলদার তাদের এ কথার কর্ণপাত না করায় একপর্যায়ে কথা কাটাকাটি হয়।

এক পর্যায়ে আসলাম গোলদার স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এ নিয়ে শুরু হয় হাতাহাতি। পরে চাঁদাবাজির অভিযোগে আসলাম গোলদারকে স্থানীয়রা ধরে থানায় আনলেও ভোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এতে স্থানীয়দের মধ্য ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

অভিযোগ রয়েছে, ২০০১ সালে ভোলার অভিভাবক ও বর্তমান ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব তোফায়েল আহমেদ গাড়ি বহরে হামলা চালায় তৎকালীন বিএনপি সন্ত্রাসী আসলাম গোলদার ও প্রিন্স বাবু। বর্তমানে তারা আওয়ামীলীগে যোগ দিয়ে সেই পুরনো সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন শুরু করে। এই প্রিন্স বাবু ও আসলাম গোলদারকে প্রশ্রয় দিয়ে আসছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি থেকে আসা কবির হোসেন ও তার ভাই সুসান।

এদের বিরুদ্ধে রয়েছে আরও অনেক অভিযোগ । তুলাতুলি টু ঢাকা লঞ্চ ঘাট ইজারা নিয়েও তারা চরম দুর্নীতি করে আসছে। ওই ঘাটে তুলাতুলি টু ঢাকা নৌ-রুটে কোনো লঞ্চ ঘাট না করলেও পাথর বোঝাই, সার বোঝাই কোন কার্গো-ট্রলার এখানে ঘাট করলে তাদেরকে দিতে হয় মোটা অংকের টাকা। এখানে যদিও বিআইডব্লিউটিএর কোনো পন্টুন নেই।

ভোলা জেলা প্রশাসক অফিস সূত্রে জানা যায়, বাৎসরিক ১৭ হাজার টাকায় এই লঞ্চঘাট ইজারা নেয় আসলাম গোলদার । স্থানীয়দের অভিযোগ চাঁদাবাজি করে মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করে আসলাম গোলদার।

এদিকে গত কিছু দিন আগে এই চাঁদাবাজ চক্রের এক সদস্যকে আটক করে ভোলা সদর থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয় স্থানীয়রা। পরে সে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পায়। এ চাঁদাবাজ চক্রটি পরিচালনা করেন সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের ফারুক মাঝি।

স্থানীয়দের দাবি তুলাতুলি লঞ্চঘাটে চাঁদাবাজি বন্ধ করে মাঝের চরের সাধারণ গরিব নির্বিঘ্নে ভোলায় আসতে পারে। তাদের কষ্টের ঘাম ঝড়ানো টাকা যেন নব্য আওয়ামী লীগ আসলাম ও প্রিন্স বাবু চাঁদাবাজি করে না খেতে পারে সে জন্য তারা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
শীর্ষবাণী/এনএ