‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক হতে হবে সমতার ভিত্তিতে ও মর্যাদাপূর্ণ’

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ভারতের সাথে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক সকল ক্ষেত্রে সম্পর্ক হতে হবে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে। ১৯৭১ সালে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ ক্ষমমতায়, বাংলাদেশ ও দেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক বিদ্যমান নেই। তারা এখন আমাদের শোষণ করে যাচ্ছে। ভারতের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে বাংলাদেশের কোনো বিশেষ দলের প্রতি আগ্রহী না হয়ে বাংলাদেশ ও তার জনগণের প্রতি আগ্রহী হওয়া।

দেশবাঁচাও মানুষবাঁচাও আন্দোলন এর উদ্যোগে আজ সকালে (২৯ মে, ২০২২) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে “বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ও জাতীয় স্বার্থ” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি কে. এম রকিবুল ইসলাম রিপন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভারতের সাথে বাংলাদেশের আমদানি রপ্তানিতে ভারসাম্য নাই। এমনকি ভারতের স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশ থেকে আয় ৬৪ শতাংশ যা অস্বাভাবিক। পোশাক খাত থেকেও তারা শোষণ করছে। ভারতের অনেকেই বাংলাদেশে চাকরি করছে যা বাংলাদেশ সরকার প্রকাশ করে না। আমাদের দেশের লোক চাকরি পায়না অথচ তাদের অনেকেই অবৈধভাবে এখানে থেকে টাকা পাচার করে ভারতে। এভাবেই ভারত শোষণ করছে।

বাংলাদেশ বন্ধুত্ব চাইলেই ভারত বন্ধুত্ব চায়না। তারা যদি বন্ধত্ব চায় তবে আমাদেরকে যথাযথ সম্মান দিতে হবে। আমাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। আমাদের, পানির হিস্যা সমাধান করতে হবে। রামপালের কয়লা বিদ্যুত ভারতের পরিকল্পিত একটি প্রজেক্ট যা সুন্দরবনকে ধ্বংস করবে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া পররাষ্ট্রনীতিতে ঘোষণা দেন, আমাদের পৃথিবীতে বন্ধু আছে, প্রভু নাই। দেশের ভোটাধিকার আদায়ে সকলকে পাশে থাকারও আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ১৯৭১ সালে আশ্রয় দিয়ে ভারত যে সহযোগিতা করেছিল সেই তারা কেন আমাদেরকে বন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছে? তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতায় তাদের সহযোগিতার উদ্দেশ্য ভিন্ন ছিলো। তিনি আরো বলেন, তিস্তার পানিসহ অন্যান্য নদীর পানির হিস্যা যথাযথভাবে দ্রুতার সাথে বাংলাদেশকে বুঝিয়ে দিতে হবে। সীমান্ত হত্যা বন্ধে সত্যিকারভাবে ভারতকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। নৌ, সড়ক, আকাশপথে ভারতের সাথে বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি জনগণের স্বার্থে হতে হবে।

সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলী বলেন, বাংলাদেশ হলো ভারতীয় উপমহাদেশের হার্টল্যান্ড। এজন্য ভারতের টার্গেট বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে অধিকাংশ হিন্দুরা আাসামে চলে গিয়েছিলো কিন্তু তাদের রেখে যাওয়া সম্পত্তি কারা নিয়েছেন? আওয়ামী লীগ নিয়েছে। কারণ, তখন ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। ভারত বাংলাদেশের সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, ভারতের সাথে আমাদের বিরোধিতা না, বিরোধীতা দিল্লির সাথে। ভারতের সকল অঞ্চল এক নয়।

বাংলাদেশ লেবার পার্টি চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ভারত আমাদের স্বাধীনতায় সহযোগিতা করলেও আমাদেরকে এখন দাস হিসেবে দেখে। ভারতের বিরুদ্ধে আমরা নই, আমরা তাদের আগ্রাসন এর বিরুদ্ধে। ভারত এমন রাষ্ট্র যার সাথে প্রতিবেশী কোন রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক ভালো নেই। আমরা তাদেরকে উপহার পাঠালে তারা ফেনসিডিল সরবরাহ করে দেশকে ধ্বংস করছে। তিনি আরো বলেন, তারা আমাদের পানিতে ডুবায়। তিস্তা ও ফারাক্কার পানি দিয়ে আমাদেরকে তারা শোষণ করছে। পানির প্রয়োজনে পানি না দিয়ে অপ্রয়োজনে পানি দিয়ে বন্যা সৃষ্টি করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।