লাশ পাহারার দায়িত্ব নিয়ে মৃত তরুণীদের সঙ্গে যৌনাচার করত মুন্না

ঢাকা অফিস : কাফরুল ও মোহাম্মদপুর থানার কয়েকটি ঘটনা বিশ্লেষণ করতেই দেখা মিলে ডিএনএ একই ব্যক্তির। এসব ঘটনায় ‘ধর্ষণ শেষে হত্যা বা ধর্ষণজনিত কারণে আত্মহত্যা’ বলে সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে প্রতীয়মান হচ্ছিল।

এরপরেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পশ্চিম বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। রাতে লাশ পাহাড়া দেওয়ায় নিযুক্ত ডোমদের খেয়াল রাখতে গিয়েই রহস্য উন্মোচিত হয়। সিআইডি প্রতিটি বিষয়কে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখে, একই ব্যক্তি দ্বারা মৃত তরুণীদের ওপর যৌন বিকৃত কাজ করা হচ্ছিল।

এরপর গোপনে নজর রেখেই যাচ্ছিল পুলিশ। তারা একটা ব্যাপারে নিশ্চিত হয় যে রাতে লাশ পাহারা দিতে নিযুক্ত থাকা লোকদের ছাড়া বাইরের কারো পক্ষে মর্গে প্রবেশ করা সম্ভব না। এরপরেই ডোমদের গতিবিধি নজরে আনে এবং মুন্না ভগত নামের ওই তরুণ চিহ্নিত হয়।

ডোম জতন কুমার লালের ভাগিনা মুন্না ভগত। তিনি মামার সঙ্গেই ওই হাসপাতালের মর্গে সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। দুই-তিন বছর ধরে মুন্না মর্গে থাকা মৃত নারীদের ধর্ষণ করে আসছিল। এ অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার তাকে আটক করে সিআইডি।

আজ শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, মুন্নাকে আটক করে তার ডিএনএ আলামত সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয় এইচভিএস- এ থাকা ডিএনএ প্রোফাইলের সঙ্গে মিলে যায়। এ থেকে বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে প্রমাণিত হয় যে মুন্নাই মৃত তরুণীদের ওপর বিকৃত যৌনাচার করতো।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ডিএনএ টেস্টে তরুণীদের মৃতদেহে শুক্রাণুর উপস্থিতি পাওয়ার পর চাঞ্চল্যের তৈরি হয়। কেন, কী কারণে আত্মহত্যাজনিত ঘটনায় উদ্ধার মৃত তরুণীদের শরীরে শুক্রাণুর উপস্থিতি মিলবে-শুরু হয় এই তদন্ত। এরপর বেরিয়ে আসে মর্গে থাকা একাধিক মৃত তরুণীর শরীরে আবার একই ব্যক্তির শুক্রাণু। পরে বেরিয়ে আসে অবিশ্বাস্য এক ঘটনা। মর্গের একজন ডোম দিনের পর দিন মৃত তরুণীর লাশের সঙ্গে এমন বিকৃত কাজ করেছে।

গণমাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত অন্তত সাত তরুণীর মৃতদেহে ওই ডোমের শুক্রাণু পাওয়া গেছে।

সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার বলেন, ‘জঘন্যতম ও খুবই বিব্রতকর অভিযোগ। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতার পরই ওই যুবককে আটক করেছে সিআইডি। বিভিন্ন স্থান থেকে যেসব লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নেওয়া হতো, সেসব লাশের মধ্য থেকে মৃত নারীদের ধর্ষণ করত মুন্না।’