নির্বাচন কমিশনের মতো ইভিএমেও আস্থা আনতে হবে : রাশিদা সুলতানা

ইভিএম দিয়ে কোনোরকম কারসাজির সুযোগ নেই দাবি করে নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশিদা সুলতানা বলেছেন, যন্ত্রের কিন্তু কোনো ত্রুটি নেই। এভিএমের ভেতরে ম্যানিপুলেট করার কোনো সুযোগই নেই। এটা আমরা নিশ্চিত হয়েই প্রায় দেড়শ আসনে এভিএমে জাতীয় নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং সিদ্ধান্ত জানিয়েও দিয়েছি।

শনিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণে এসে আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

রাশিদা সুলতানা বলেন, যন্ত্র কখনও খারাপ হয় না, যন্ত্রের পেছনে হয়তো কেউ কেউ দুষ্কর্ম করতে চান। আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে এমন দুষ্কর্মকে কখনো প্রশ্রয় দেইনি এবং আগামীতেও দেবনা। অন্তত নির্বাচন কমিশনের প্রতি এটুকু আস্থা রাখতে পারেন।

নির্বাচন কমিশন ও ইভিএমের প্রতি আস্থা তৈরির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বসার পর থেকেই শুনছি যে, নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা নেই, আস্থা নেই। কেবল নির্বাচন কমিশন একা আস্থা তৈরি করবে তা নয়, সকলকে আস্থা তৈরি করতে হবে। কারও না কারও প্রতি বিশ্বাস থাকতে হবে। আমরা ভালো এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চাই- এই আস্থা ও বিশ্বাস মনের ভেতর আনতে হবে।

ইভিএম নিয়ে এক মেয়র প্রার্থীর শঙ্কার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার বলেন, শুধু উনি কেন, ইভিএম নিয়ে অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। আমি শুধু এটুকু বলবো, নির্বাচন কমিশনের মতো ইভিএমেও আস্থা আনতে হবে। আমরা দায়িত্বে আসার পর ব্যাপকভাবে ইভিএমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভাসহ ৮০০-৯০০ নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার করেছি। ইভিএম বা যন্ত্রে কিন্তু কোনো ত্রুটি নেই।

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বেগম রাশিদা সুলতানা। তিনি আরও বলেন, আমরা এই নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। নির্বাচন সফল করতে যা যা করার দরকার সব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সারাদেশে রংপুরের সুনাম রয়েছে, সেই সুনাম অক্ষুন্ন থাকবে। আমরা সেই রকমই নির্বাচন প্রত্যাশা করছি। এজন্য রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়া সকল প্রার্থী ও ভোটারসহ নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করি।

রাশিদা সুলতানা বলেন, যারা ভোটার তাদেরকে আমি বলব তারা যেন কেন্দ্রে আসেন। তারা ভোট দেওয়ার চেষ্টা করেন। যদি তাদের কেউ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকবে। ভোটে বাধা দেওয়ার বিষয়ে যদি আমাদেরকে জানানো হয়, তাহলে আমরা ভোট পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে পারব। একজন ভোটার হিসেবে, এই এলাকাবাসী হিসেবে আপনাদেরও কিছু দায়িত্ব আছে, সেটি আপনারা পালন করবেন।

এ সময় রংপুর বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার নুরে আলম মিনা, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব আবদুল বাতেন, রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেনসহ সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এবার তৃতীয় বারের মতো রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ২৯ নভেম্বর। ১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই এবং ৮ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে পরদিন ৯ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা ১৭ দিন প্রচার-প্রচারণার সুযোগ পাবেন। ২৭ ডিসেম্বর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত এক টানা ভোটগ্রহণ করা হবে।