ঘুমের ঘোরে বাস চালাচ্ছিলেন চালক, নিহত বেড়ে ৬

চুয়াডাঙ্গা প্রতনিধি : চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ বাজারে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী নৈশকোচ রয়েল এক্সপ্রেসের ধাক্কায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ছয়জনে দাঁড়িয়েছে। চালকের ঘুমের কারণে আধা কিলোমিটার সড়কজুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছে নৈশকোচটি। ঘুমের ঘোরে বাস চালানোর কারণে চালকের ভুলে প্রাণ গেছে ছয়জনের। আহত হয়েছেন আরও তিনজন। শনিবার (৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, চট্টগ্রাম থেকে মাত্র একজন চালকই নৈশকোচটি চালিয়ে নিয়ে আসছিলেন। দীর্ঘ ১২-১৪ ঘণ্টা বাস চালানোর কারণে তিনি ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। আর এ জন্যই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয়রা ওই নৈশকোচের চালক, তত্ত্বাবধায়ক এবং চালকের সহকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

নিহতরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ভান্ডাদুয়া গ্রামের নিতাই হালদারের ছেলে ষষ্টি হালদার (৪০), খাড়াগুদা গ্রামের মাহতাব উদ্দিনের ছেলে মিলন হোসেন (৩০), তিতুদহ গ্রামের পিয়াস আলীর ছেলে রাজু আহমেদ (৩৫), একই গ্রামের লুতা মণ্ডলের ছেলে সোহাগ হোসেন (২৮), হায়দার আলীর ছেলে কালু মন্ডল (৪০) এবং রহিম মন্ডলের ছেলে শরিফ হোসেন (৪০)। নিহতরা আলমসাধু, পাখিভ্যান এবং মোটরসাইকেলের আরোহী ছিলেন।

অপরদিকে আহতরা হলেন- সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ বাজারের বজলুর রহমানের ছেলে পথচারী বাবলুর রহমান (৩৫), তিতুদহ গ্রামের আলমসাধু আরোহী খোদাবক্স আলীর ছেলে আকাশ হোসেন (২৮) এবং রহিম মণ্ডলের ছেলে জুম্মাত আলী (৩০)। আহতদেরকে স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তারিকসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সাংবাদিক মো. জিয়া উদ্দিন জানান, যাত্রীবাহী নৈশকোচ রয়েল এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম থেকে শুক্রবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গার দর্শনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ বাজারে পৌঁছালে যাত্রীবাহী নৈশকোচটি প্রথমে একটি আলমসাধুকে ধাক্কা দেয়। এরপর পর্যায়ক্রমে পাখিভ্যান, মোটরসাইকেল ও আরও একটি আলমসাধুসহ সাতজন পথচারীকে ধাক্কা দেয়।

সরোজগঞ্জ বাজার থেকে মিতালী সিনেমা হল পর্যন্ত আধা কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়। পরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়ার পর একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা আলমসাধু, পাখিভ্যান এবং মোটরসাইকেলের আরোহী ছিলেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ মো. ফখরুল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত বলেন, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালের ভর্তি করেছি।

তিনি বলেন, আলমসাধু, পাখিভ্যান, মোটরসাইকেল সঠিক পথ দিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু নৈশকোচটি ভুল পথে গিয়ে তাদেরকে ধাক্কা দিয়েছে। ইতোমধ্যে নৈশকোচটি আটক করা হয়েছে। নৈশকোচের চালক ও সহকারীকে গ্রেফতার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।