করোনায় আক্রান্ত ২৭ ব্যাংকার, ৩ জনের মৃত্যু

ঢাকা অফিস : বৃহস্পতিবার (১৪ মে) করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছেন জনতা ব্যাংকের হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শাখার এক কর্মকর্তা। আগের দিন ১৩ মে আক্রান্ত হয়েছেন আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখার এক ব্যাংক কর্মকর্তা। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর তথ্য থেকে জানা গেছে ১৫ মে পর্যন্ত ২৭ ব্যাংকার করোনায় আক্রান্ত ও তিনজন কর্মকর্তার মারা যাওয়ার খবর।

নীলফামারী জেলায় মোট ৫ জন ব্যাংকার আক্রান্ত হয়েছেন। জেলা সিভিল সার্জন ডা. রনজিৎ কুমার বর্মন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পাঁচজনের মধ্যে চারজন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ সৈয়দপুর শাখার কর্মকর্তা ও অপরজন জেলার ডিমলা উপজেলার রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ডাঙ্গাপাড়া শাখার কর্মকর্তা। এর আগে ইসলামী ব্যাংক সৈয়দপুর শাখার ১৩ কর্মী জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হওয়ায় ২৮ এপ্রিল অনির্দিষ্টকালের জন্য শাখাটি বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম কামাল হোসেন বলেন এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখার একজন সিকিউরিটি গার্ড করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এপ্রিলের শুরুর দিকে ব্যাংকটির বংশাল শাখার দু’জন নিরাপত্তাকর্মী করোনায় আক্রান্ত হলে শাখাটি ১৪ দিন বন্ধ রেখে খুলে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও রূপালী ব্যাংকের একজন উপ-মহাব্যবস্থাপক এবং একজন প্রিন্সিপাল অফিসার করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাসায় আইসোলেশনে ছিলেন। এদের মধ্যে রূপালী ব্যাংকের একজন উপ-মহাব্যবস্থাপক আজ রাতে মারা গেছেন।

সোনালী ব্যাংকের ঢাকার শিল্প ভবন শাখার একজন, নরসিংদী শাখার একজন, কিশোরগঞ্জের একজন, রমনা করপোরেট শাখার একজন ও রংপুর শাখার দু’জন কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অগ্রণী ব্যাংকের সাভার নবীনগর শাখার একজন এবং ওয়াসা ভবন শাখার একজন কর্মকর্তা নতুনভাবে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এর আগে গত ২৫ এপ্রিল সোনালী ব্যাংকের রংপুর বাজার শাখার চারজন কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। শাখাটির কার‌্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

গত ২ মে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) নীলফামারী জেলার ডিমলা থানার ডাঙ্গারহাট শাখার একজন কর্মকর্তা। অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখার একজন কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার শাখাটি কিছুদিন বন্ধ রেখে আবার খোলা হয়েছে।

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুল হামীদ সোহাগ বলেন, আমাদের ব্যাংকের রাজধানীর দারুস সালাম শাখার এক কর্মকর্তার কোভিড-১৯ পজিটিভ আসায় শাখাটির কার্যক্রম বন্ধ। আরও একটি শাখার একজন কর্মকর্তার করোনা পজিটিভ দাবী করায় গত ৯ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট শাখাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

গত ১২ মে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বেসরকারি খাতের দ্য সিটি ব্যাংকের আরও এক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। তার নাম আবু সাঈদ। তিনি প্রধান কার্যালয়ে সেন্ট্রাল ক্লিয়ারিং বিভাগের অ্যাসিসটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এর আগে গত ২৬ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে সিটি ব্যাংকের আরেক কর্মকর্তা (প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা) মুজতবা শাহরিয়ার মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এবিষয়ে বেসরকারি ব্যাংক এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান (এবিবি) ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা কর্মীদের নিরাপদ রেখে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। তারপরও কোনো কর্মী আক্রান্ত হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক সবধরণের আর্থিক সহযোগীতা করা হচ্ছে।